বুধবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৫

শাবনূর, শাবনাজ, মৌসুমী এখন কোথায়, সময় কাটছে কীভাবে

Must read

শাবনাজের হঠাৎ দেখা মেলে

‘চাঁদনী’ ছবির চাঁদনীর কথা নিশ্চয় মনে আছে। ১৯৯১ সালে এহতেশাম পরিচালিত সেই ছবিতে চাঁদনী চরিত্রে অভিনয় করে রীতিমতো সাড়া ফেলে দেন শাবনাজ। ১৮ বছর ধরে তিনি নেই চলচ্চিত্রে। স্বামী, সন্তান আর সংসার নিয়েই ব্যস্ত। থাকেন ঢাকার উত্তরায়। চলচ্চিত্রে অভিনয় ছেড়ে দিলেও নাটকে অভিনয় করেছিলেন শাবনাজ। দুটি মাধ্যম থেকেই এখন আড়ালে তিনি। আড়ালে থাকা শাবনাজের হঠাৎ দেখা মেলে চলচ্চিত্র কিংবা নাটকসংশ্লিষ্ট কিছু ঘরোয়া আয়োজনে।

শাবনাজ

শাবনাজছবি : অভিনেত্রীর সৌজন্যে

শাবনাজ জানান, নিজেকে এখন একেবারে অন্য এক জীবনের বাসিন্দা করে রেখেছেন, যে জীবনে সংসার, স্বামী ও সন্তান ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে চান না। চলচ্চিত্রে কাজ করতে গিয়ে সহশিল্পী, সেই সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক নাঈমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। তিনি জানান, ‘বিষের বাঁশি’ ছবির কাজ করতে গিয়ে দুজনের প্রেমের শুরু। আর ‘লাভ’ ছবির কাজ করতে গিয়ে ভালোবাসা বাড়তে থাকে। তবে শুরুতে কেউ কাউকে নিজেদের ভালো লাগার বিষয়টি বুঝতে দিতে চাইতেন না। ছবিতে অভিনয়ের তিন বছরের মাথায় শাবনাজ ও নাঈম দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।

শাবনূর জানালেন, টম ক্রুজ ও ডিক্যাপ্রিওর প্রেমে পড়ার কারণ

শাবনাজ–নাঈম একসঙ্গে কাটিয়ে দিয়েছেন প্রায় তিন দশকের বেশি সময়

শাবনাজ–নাঈম একসঙ্গে কাটিয়ে দিয়েছেন প্রায় তিন দশকের বেশি সময়ছবি : সংগৃহীত

১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর তাঁরা ভালোবেসে বিয়ে করেন। বিয়ের পর দুই বছর ছবিতে অভিনয় করেন শাবনাজ। বিয়ের পর নাঈমের বাবা মারা যান। এতে ভীষণ ভেঙে পড়েন নাঈম। সময়টায় শাবনাজকে স্বামীর পাশে থাকতে হতো সবচেয়ে বেশি। শাবনাজ বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠেই ময়না, ময়না (শাবনাজকে ময়না বলে ডাকেন নাঈম) বলে ডাকাডাকি করে অস্থির করে ফেলত নাঈম। আমাকে ওর সামনে বসে থাকতে হতো। আমার সঙ্গটা তখন ওর বেশি দরকারও ছিল। আমরা অনেক গল্প করতাম, আড্ডা দিতাম। নাঈম কাজও কমিয়ে দেয়। আমিও হাতে থাকা কিছু ছবির কাজ করে নিজেকে গুটিয়ে নিই।’

মৌসুমী দেশে ফিরবেন কবে

নব্বইয়ের দশকের সোনালি পর্দার উজ্জ্বল তারকা মৌসুমী। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিটি দিয়েই মানুষের মনে জায়গা করে নেন। সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ছবিটি ব্লকবাস্টার ব্যবসা করে। দীর্ঘ দেড় বছর তিনি রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে। দূরে সরে আছেন দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন থেকে। স্বামী, অভিনেতা ওমর সানী জানান, মৌসুমী এখন অভিনয় থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার চিন্তায় রয়েছেন।

ওমর সানীর ভাষ্যে, ‘দুই-তিন বছর ধরে মৌসুমী বলছে, অভিনয়ে আর আগ্রহ পাচ্ছে না। ভালো গল্প পায় না, আর শুটিংয়ের সময় কাজের সঙ্গে কথার মিলও থাকে না। আমি বহুবার অনুরোধ করে তাকে অভিনয়ে ফিরিয়েছি। কিন্তু এবার সে বেশ দৃঢ় নিজের সিদ্ধান্তে।’

মৌসুমী

বর্তমানে নিউ জার্সিতে মা ও মেয়ে ফাইজাকে নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন মৌসুমী। মায়ের অসুস্থতা এবং মেয়ের বেড়ে ওঠার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাঁদের পাশে থেকে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। জীবনের এই নতুন অধ্যায়ে পরিবারকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’খ্যাত এই চিত্রতারকা।

সবশেষে মৌসুমী অভিনয় করেছেন ‘দেশান্তর’ ছবিতে। এর আগে ‘সোনার চর’ ও ‘ভাঙ্গন’ ছবিতেও দেখা গেছে তাঁকে। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হিসেবেও কাজ করেছিলেন। মৌসুমীর দেশে ফেরার সম্ভাবনা নিয়েও আপাতত অনিশ্চয়তা।

৩০ বছরের সংসারে একে অন্যের চোখে কেমন নাঈম-শাবনাজ

সেলফি তুলছেন তারকা দম্পতি ওমর সানি ও মৌসুমী

ওমর সানীর কথায়, ‘এই মুহূর্তে মৌসুমীর দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই। বরং আমি হয়তো সব কাজ গুছিয়ে তাদের কাছেই চলে যাব।’

তবে অভিনয়কে মৌসুমী চূড়ান্তভাবে বিদায় জানাচ্ছেন কি না, সেটা এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। হয়তো সময়ের ব্যবধানে, মানসিকতার পরিবর্তনে কিংবা একটি ভালো গল্পের টানে আবারও বড় পর্দায় দেখা যেতে পারে তাঁকে।

ফুটেজ ফাঁস নাকি ইচ্ছাকৃত চাল? ক্ষোভ উগরে দিলেন শাবনূর

শাবনূর

শাবনূর থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়

মাত্র ১৪ বছর বয়সে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন শাবনূর। টানা দেড় যুগ এই মাধ্যমে কাটিয়ে দিয়েছেন। বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করে সমসাময়িক নায়িকাদের মধ্যে ঢালিউডের সেরা আসনটি নিজের করে নিয়েছিলেন। আজও শাবনূর চর্চিত একটি নাম। এক যুগের বেশি সময় ধরে অনিয়মিত তিনি। বিয়ে ও সংসারী হয়েছেন। থাকেন দেশের বাইরে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তাঁর জীবনযাপন। মাঝেমধ্যে ঢাকায় আসেন। গেল বছরও যেমনটা এসেছিলেন। এরপর তাঁকে নিয়ে ছবির ঘোষণাও এসেছিল।

শাবনূর

দীর্ঘ অভিনয়জীবনে শাবনূর অভিনয় নিয়ে যতটা প্রিয় হয়েছিলেন, নানা স্ক্যান্ডালও তাঁকে জেঁকে ধরেছিল। তবে এসবকে পাত্তাই দিতেন না ঢালিউডের এই দাপুটে নায়িকা। শাবনূরকে নিয়ে প্রেমের গুঞ্জন কম হয়নি। তারকার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের ঘিরেও গুঞ্জনের ডালপালা ছড়িয়েছিল। তবে শাবনূর আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, তিনি ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী অনীক মাহমুদের সঙ্গে আংটি বদল করেন। পরের বছরের ২৮ ডিসেম্বর তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

এর পর থেকেই ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রে অনিয়মিত হয়ে পড়েন শাবনূর। বিয়ের পর ভাই ও বোনদের মতো শাবনূরও স্বামী অনীককে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস শুরু করেন। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর শাবনূর-অনীক দম্পতির ছেলে আইজান নিহানের জন্ম হয়। ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি অনীক মাহমুদের সঙ্গে শাবনূর বিবাহবিচ্ছেদের খবর জানান।

ছেলেকে নিয়ে শাবনূর ঘুরছেন সিডনি থেকে তাসমানিয়া

সন্তানের সঙ্গে শাবনূর

বর্তমানে সন্তানকে নিয়ে স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়াতেই বসবাস করছেন বাংলা চলচ্চিত্রের একসময়ের সুপারহিট এই নায়িকা। অস্ট্রেলিয়ায় শাবনূরের সময় কাটে কীভাবে? ‘আমার তো ভাই-বোন-মাসহ সবাই এখন অস্ট্রেলিয়াতে থাকেন। এক যুগের বেশি সময় এখানে থাকার কারণে অনেক বন্ধুবান্ধবও জুটেছে। তাঁদের সঙ্গে আড্ডা হয়। ঘুরতে যাই। আমি নিজে ড্রাইভ করতে পছন্দ করি। বন্ধুরা ব্যস্ত থাকলে আমি ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে বের হই। তা ছাড়া আমার ছেলের স্কুল আছে, তার দেখভাল সবই আমাকে করতে হয়। ক্রিকেট ওর প্রিয় খেলা। সময় পেলে আমরা মা–ছেলেসহ অন্যরা মিলে মাঠে গিয়ে খেলা দেখি। আমার কাছে তো মনে হয়, সময় আরও কম হয়। সে হিসেবে বলতে পারি, পরিবার, সাংসারিক নানা কাজকর্ম এবং বন্ধুবান্ধব মিলে সময়টা দারুণ কাটে।’ বললেন শাবনূর।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article