রাজধানীর মগবাজারের দিলু রোড সংলগ্ন নিউ ইস্কাটন রোডে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত সিয়াম মজুমদার (২১) ছিলেন মোটর মেকানিক।
তিনি পরিবারের সঙ্গে নিউ ইস্কাটনের ‘দুই হাজারের’ গলিতে থাকতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তার বাবা আলী আকবর মজুমদার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালান।
আজ সন্ধ্যা ৭টার দিকে মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে ছোড়া ককটেলের আঘাতে নিচে চা দোকানে থাকা সিয়াম নিহত হন।
রাত ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা হয় নিহতের বাবা আলী আকবর মজুমদারের সঙ্গে।
জিজ্ঞাসা করতেই তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সন্ত্রাস কেন হলো, বোমা কেন পড়ল, আমার ছেলে কেন মারা গেল।’ এই প্রশ্নগুলোই বারবার করছিলেন তিনি।
চিৎকার করে তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনার জন্য সরকার দায়ী। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।’
সিয়ামের গ্রামের বাড়ি খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার কলোনি এলাকায়। তিনি নিউ ইস্কাটনে ‘জাহিদ কার ডেকোরেশনে’ কাজ করতেন।
‘সিয়াম সকাল ৯টায় কাজে যেত, রাত ৯টায় ফিরত। কখনো কোনো ঝামেলায় জড়ায়নি,’ বলেন আলী আকবর।
তিনি আরও বলেন, ‘শুনেছি দোকান থেকে একটি চায়ের কাপ পাশের দোকানে রেখে আসতে গিয়েছিল সিয়াম। সেই কাপ ফেরত দিতে গেলেই ককটেল বিস্ফোরণে মারা যায়।
পুলিশের ধারণা, মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে দুর্বৃত্তরা ককটেল নিক্ষেপ করে।
ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে এবং মগবাজার ফ্লাইওভারের প্রবেশমুখে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পেয়েছি ঘটনাস্থলে ফ্লাইওভারের একটি বড় অংশের আলো বন্ধ ছিল, বিশেষ করে যেখান থেকে বোমাটি নিক্ষেপ করা হয়েছিল। সেখানে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই।’
রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ‘ফ্লাইওভারে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় এখনো কাউকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।’
ঘটনার পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বিস্ফোরণেরস্থলটি বাংলাদেশ জাতীয় চার্চ পরিষদের একদম কাছেই। বড়দিনের আগে এই ঘটনা জনমনে বাড়তি আতঙ্ক তৈরি করেছে বলেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

