কিছুদিন আগেই প্রকাশিত হয়েছে হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট, যেখানে ১২ হাজার ৪৯০ কোটি রুপি নিয়ে বলিউড তারকাদের মধ্যে শীর্ষে আছেন শাহরুখ খান। তবে বলিউডে এমন একজন আছেন যিনি শাহরুখের চেয়ে বেশি ধনী। তবে সিনেমা দুনিয়ায় থাকলেও তিনি পর্দার আড়ালে মানুষ। তিনি প্রযোজক রনি স্ক্রুওয়ালা।
বেজমেন্ট থেকে বড় পর্দা
হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট ২০২৫ অনুযায়ী, রনি হলেন বলিউডের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তাঁর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৩ হাজার ৩১৪ কোটি রুপি (১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি)। তিনি শুরু করেছিলেন টুথব্রাশ প্রস্তুতকারক একটি ছোট কোম্পানি থেকে, পরে এগিয়েছিলেন ইউটিভি প্রোডাকশন হাউসে। এই প্রযোজনা সংস্থার ব্যানারে তৈরি হয়েছে বহু আলোচিত ও ব্যবসাসফল ছবি যেমন ‘স্বদেশ, ‘লক্ষ্য’, ‘রং দে বাসন্তী’, ‘যোধা আকবর’, ‘আ ওয়েডনেসডে’ ইত্যাদি।
তিনবার দেউলিয়া, কিন্তু থামেননি
রনি সম্প্রতি ক্যারিরশ অ্যাডভাইস শো প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা স্মরণ করেছেন। তিন মাসের একটি বিজ্ঞাপন সংস্থায় কাজ করার পর তিনি বুঝেছিলেন যে তিনি কারও অধীনে কাজ করতে চান না। তিনি বলেন, ‘আমার প্রথম চাকরি ছিল বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কপিরাইটার হিসেবে। তিন মাস কাজ করেছিলাম সেখানে। প্রথম মাসেই বুঝে গেলাম যে আমি আমার বসের চেয়ে স্মার্ট। এক মাস না যেতেই স্পষ্ট হলো, আমি অন্য কারও ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করতে পারব না। আমি নিজের জন্য কিছু করতে চাইছিলাম, যদিও তখনো জানতাম না যে সেটা কী হবে।’
রনি হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমি প্রথম যে ২৫ জন কর্মী নিয়োগ দিই, তাঁদের প্রত্যেকেরই মা–বাবার সাক্ষাৎকার নিতে হয়েছিল! প্রার্থীরা দারুণ ছিলেন, কিন্তু তাঁদের মা-বাবারাই চেয়েছিলেন আমি যেন গিয়ে তাঁদের রাজি করাই।’
এরপরই শুরু হয় রনির সংগ্রামের অধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করেছিলাম একটা বেজমেন্ট থেকে। প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকত না। মা–বাবারা এসে অফিস দেখে হতবাক হয়ে যেতেন। তাঁদের চোখে সেটা কোনো অফিস ছিল না!’
রনি আরও বলেন, ‘আমরা তিনবার দেউলিয়া হয়েছিলাম। তবু আমি কখনো কাউকে চাকরি থেকে বাদ দিইনি, যদি না সত্যিই কোনো গুরুতর ভুল করে থাকে। এতে একটা বিশ্বাস তৈরি হয়। আমার কর্মীরা জানতেন, যতক্ষণ না তাঁরা কোনো অন্যায় করছেন, তাঁদের চাকরি নিরাপদ। প্রথমবার যখন আমি তাঁদের বেতন দিতে পারিনি, তখন উল্টো তাঁরাই আমাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে পানীয় খাওয়ালেন!’

