ছোটখাটো ভিন্নতা ও দূরত্ব দূর করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, ভিন্নতা ও দূরত্ব দূর করে যেভাবে সনদ স্বাক্ষর করা গেছে, আগামী নির্বাচনকে সেভাবেই একটা অর্থপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে। এটা যেন সবার কাছে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়।
আজ শনিবার পানি ভবনের মাল্টিপারপাস হলে শ্রমিক-কর্মচারীদের সাধারণ সভা ও সম্মেলন ২০২৫-এ এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন।
নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যাঁরা নির্বাচিত হবেন, তাঁরা সংসদকে সত্যিকার অর্থে প্রাণবন্ত করে গড়ে তুলবেন বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল।
আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে, আপনি সত্যিকার অর্থে একটি উদারপন্থী গণতন্ত্রের দিকে যাবেন, নাকি আবার অন্যদিকে চলে যাবেন। আমাদের এই কথা ভুললে চলবে না যে, ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিলাম। সেই স্বাধীনতাযুদ্ধ ছিল আমাদের একটা নতুন জাতি সৃষ্টির আন্দোলন। সেই ১৯৭১ সালের যুদ্ধকে আমাদের মনে রাখতে হবে।’
জুলাই সনদে স্বাক্ষর রাষ্ট্রকাঠামো পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশের ইতিহাসে অনন্য ঘটনা হিসেবে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই সনদে দুর্নীতির সংশোধন একই সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনীতিকে আরও স্বচ্ছ করার, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আরও উন্নত করার, গণতান্ত্রিক কালচার গড়ে ওঠা এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘ সাত-আট মাস কাজ করে এটা নিয়ে এসেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারকে সবার সহযোগিতা করা উচিত। এক বছরের মধ্যে সব জঞ্জাল শেষ করে ফেলা সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে যে জঞ্জাল সৃষ্টি করে গেছে, সবকিছুকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে, সেগুলোকে এক বছরের মধ্যে ঠিক করে ফেলা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।
সংসদীয় রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্ব নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে পার্লামেন্টারি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। সব কর্মকাণ্ডকে পার্লামেন্টকেন্দ্রিক করতে হবে। তা না হলে সংসদীয় গণতন্ত্র কাজ করবে না।
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, পৃথিবীর যেসব দেশের পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি সফল হয়েছে, সেসব দেশ পার্লামেন্টকে কেন্দ্রবিন্দু করেই রাজনীতি করেছে। রাস্তা থেকে পার্লামেন্টে উঠে আসতে হবে।
ফখরুল বলেন, তাঁরা আর কত দিন রাস্তায় থাকবেন। গত ৫০ বছর তো তাঁরা রাস্তায় চলছেন…। এসব ঠিক করে সনদের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে কালচারে পরিণত করতে হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

