বুধবার, নভেম্বর ৫, ২০২৫

কাঁচা পাট রপ্তানিতে সরকারি বাধ্যবাধকতা শিথিল চায় নেপাল

Must read

সরকারের অনুমতি নিয়ে কাঁচা পাট রপ্তানির বাধ্যবাধকতা শিথিলের অনুরোধ জানিয়েছে নেপাল। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ অনুরোধ জানান ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার সময় নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি বাণিজ্য উপদেষ্টাকে জানান, নেপালে ১১টি পাটকল রয়েছে। তারা মূলত বাংলাদেশি কাঁচা পাট আমদানির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু গত ৮ সেপ্টেম্বর কাঁচা পাট রপ্তানিতে সরকারি অনুমতি আরোপ করায় তাদের পাটকলগুলো কিছুটা সমস্যায় পড়েছে।

জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন নেপালের রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে বাংলাদেশের পাটপণ্য ও কাঁচা পাটের চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ উচ্চমানের ও পরিবেশবান্ধব আধা প্রক্রিয়াজাত পাটপণ্য উৎপাদন করছে এবং বাংলাদেশ চায় কাঁচা পাট রপ্তানির বদলে বরং আধা প্রক্রিয়াজাত পাটপণ্য বেশি রপ্তানি করতে। নেপাল বাংলাদেশ থেকে এই পণ্যগুলো আমদানি করলে উভয় দেশই লাভবান হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও নেপালের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৫ কোটি মার্কিন ডলারের কাছাকাছি, যা বাংলাদেশের অনুকূলে। বাংলাদেশ দেশটিতে রপ্তানি করে ৪ কোটি ডলারের মতো পণ্য, আর দেশটি থেকে আমদানি করে ১ কোটি ডলারের পণ্য।

বাংলাদেশ নেপালে রপ্তানি করে প্রধানত তৈরি পোশাক, কাঁচা পাট, পাট ও পাটজাত পণ্য, ওষুধ, আলু, বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী, আসবাব, ব্যাটারি, হাঁস-মুরগির খাবার, প্রসাধনী, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড, কাগজ, কাচ এবং বিভিন্ন ধরনের খাদ্য ও পানীয়। নেপাল থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে মসুর ডাল, আদা, সয়াবিন তেল, মরিচ, কৃষিপণ্য ইত্যাদি।

এদিকে বাংলাদেশের পাটকলমালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঁচা পাট রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকার শুধু অনুমতি নেওয়ার শর্ত দিয়েছে, পুরোপুরি রপ্তানি বন্ধ করেনি। পাটকলমালিকেরা কাঁচা পাট রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে। তাঁদের মতে, তা না করলে দেশের পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। পাট রপ্তানি উন্মুক্ত হতে পারে এবং তখন দাম আরও বাড়তে পারে—এমন চিন্তা থেকে একটি শ্রেণি পাট মজুত করছে। ফলে এখনই অনেক পাটকল কাঁচা পাট কিনতে পারছে না।

নেপালে প্রাণ, আকিজ ও কয়েকটি বাংলাদেশি ওষুধ কোম্পানি কাজ করছে। দেশটি থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া আওয়ামী লীগ সরকার আমলেই চূড়ান্ত হয়ে আছে। আগামী বছর স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালও রয়েছে। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো মুক্তবাণিজ্যচুক্তি (এফটিএ) নেই। তবে অগ্রাধিকার বাণিজ্যচুক্তি (পিটিএ) হওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলমান।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article